DURGAPURনিজস্ব সংবাদ : বিপজ্জনকভাবে নামছে পুর নিগমের আয়ে,তা নিয়ে সম্প্রতি হুঁশ ফিরলও, হেলদোল বিশেষ নেই দুর্গাপুর পুরনিগমের দন্ডমুন্ডের কর্তা-কর্ত্রীদের। তবে, ঘুম উড়েছে পুরনিগমের একাউন্টস্ বিভাগের আধিকারিকদের। বিভাগেরই এক আধিকারিকের কথায়,”আয় কমেছে, তাই ব্যায় সংকোচের কথা মুখে বললেও বাস্তবে তার তেমন কোনো লক্ষণই নেই এখানে।”
প্রশ্ন হচ্ছে-কতটাই বা ধস্ নামল পুরসভার আয়ে ? কেনই বা হঠাৎ এভাবে ধস্ নামল ? কেন ধস্ নামল তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পুরনিগমের চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্র নাথ পাল সরাসরি ‘কোভিড- ১৯’ অতিমারীকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তার কথায়, “পুরনিগমের বিভিন্ন বিভাগের আয় মাসে প্রায় কোটি টাকার বেশি কমে গেছে- এটা সত্যি। কিন্তু, এর পেছনে আসল কারণটাই হলো কোভিড অতিমারীর পর মানুষের রোজগারে ধাক্কা। সে কারণে আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত মানুষের কাছ থেকে জোর করে কর আদায় করার কথা আমরা ভাবিনি।”
পুরনিগাম সূত্রে পাওয়া তথ্য মোতাবেক, ২০২১-র জানুয়ারি মাসে পুরো নিগমের মোট আয় যেখানে ছিল ৩.৬২কোটি টাকা, ২০২২-র জানুয়ারিতে তা হস্ করে নেমে যায় ২.১৪ কোটি টাকায়। যা প্রায় ১.৪৮ কোটি টাকা কম। পুরনিগমের চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্র নাথ পাল ‘কোভিড-১৯’র ‘অজুহাত’ খাড়া করলেও, দেখা যাচ্ছে ঠিক একটি মাস আগেই ২০২১-র ডিসেম্বরে আয় সর্বোচ্চ ৩.৭৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছিল। কি করে তা সম্ভব হল? এর কোনো সদুত্তর অবশ্য পুরনিগমে মেলেনি।
পুরনিগমের অর্থ দপ্তরের আধিকারিক শিব শঙ্কর বণিকের পেশ করা রাজস্ব আদায়ের হিসাবে দেখা যাচ্ছে-পুরকর আদায়, পূর্ত বিভাগের রাজস্ব, বাস্তু বিভাগ থেকে আয় এবং জল সরবরাহ বিভাগের রাজস্ব বিস্তর ধাক্কা খেয়েছে গত চার মাসে। গত ২০২১-র সাপেক্ষে তা অনেকটাই বেশী। কিভাবে এই ‘আয়- বিপর্যয়’ থেকে নিস্তার মেলে- তা নিয়েই কার্যতঃ মাথার চুল ছিঁড়ছেন পুর নিগমের অর্থ বিভাগের আধিকারিকেরা।
পুরনিগমের পূর্ত বিভাগের আয় ২০২১-র জানুয়ারিতে ছিল ৮৫.০৯ লক্ষ টাকা যা ২০২২-র জানুয়ারিতে নেমে যায় ৩৫.২২ লক্ষে। পুরকর সংগ্রহ ২০২১-র জানুয়ারিতে ছিল ৯১.৮১ লক্ষ, যা ২০২২-র জানুয়ারিতে নেমে যায় ৪৯.৩২ লক্ষে। ঠিক তার আগের মাসেই ২০২১-র ডিসেম্বরে কর আদায় ১.৪০ কোটি টাকা ছুঁয়েছিল। বিস্তর ধাক্কা আসে বাস্তুকর সংগ্রহেও। পুরনিগমের সূত্রে জানা যায়- ২০২১- র জানুয়ারিতে বাস্তুকর আয় ছিল ৫৮.৯৬ লক্ষ টাকা- যা ২০২২- র জানুয়ারিতে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়ে নেমে যায় ১১.৮১ লক্ষে। এইভাবে জলকর সংগ্রহ মাসে ৯৬.১৪ লক্ষ টাকা থেকে কমে দাঁড়ায় ৫৫.৮৫ লক্ষ টাকায়। তবে, ওই সময়ের সাপেক্ষে শুধুমাত্র লাইসেন্স বিভাগই তারা আয় ১৫.৪৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০২২- র জানুয়ারিতে ৪৪.৮৫ লক্ষ টাকায় নিয়ে যেতে পেরেছে।
বিভিন্ন বিভাগে ক্রমাগত আয় কমে যাওয়া রুখতে, কার্যতঃ ‘দুয়ারে কর আদায়’ ধাঁচে বিভিন্ন বরো অফিসে পুরকর, বাস্তুকর ও জলকর সংগ্রহের আলাদা ব্যবস্থা করেছে পুর নিগম। তবে, হাতেনাতে তার ফল এখনো সেরকম মেলেনি, বলে পুরো নিগম সূত্রে জানা গেছে। এরই মাঝে পুর নিগমের চেয়ারম্যানকে মাথায় বসিয়ে ৬ জনের একটি একাউন্টস্ কমিটি গঠন করেছে নিগম। যাতে পুর নিগমের কমিশনার, সচিব, অর্থ আধিকারিক, এক কাউন্সিলর ছাড়াও হায়ার করে আনা হয়েছে এক চার্টার্ড একাউন্টেন্টকে। প্রশ্ন-এত করেও কি হাল ফেরার ইঙ্গিত মিল