কলকাতা : পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসানোর বিল। কিন্তু বিলটি নিয়ে বিতর্ক বাধল শাসক ও বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে। গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসানোর বিল পাশ হয়েছিল, এমন উদাহরণের বিপরীতে পাল্টা যুক্তি দিলেন বিজেপি বিধায়করা।সোমবার বিধানসভায় সরকারের তরফে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল’ (সংশোধনী) বিল, ২০২২ পেশ করা হয়। বিলটি পেশ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শাসক-বিরোধী শিবিরের আলোচনার পর বিলের বিরোধিতা করে ডিভিশন চান বিজেপি বিধায়করা। তাতেই হয় ভোটাভুটি। সেই ভোটে পাশ হয় বিলটি। বিলের পক্ষে পড়ে ১৮২টি, বিপক্ষে পড়ে ৪০টি ভোট। এই বিল পেশের ফলে মোট ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর পথ পরিষ্কার হল।
পাল্টা যুক্তিতে বিল পাশ হলেও, তা কোনও ভাবেই রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকর করা সম্ভব হবে না বলেই দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “রিটায়ারমেন্ট হয়ে যাবে, তবু কোনও দিনও মুখ্যমন্ত্রী আচার্য হতে পারবেন না। এই বিল পাশ হওয়ার পর তা যাবে রাজ্যপালের কাছে। তিনি অনুমোদন দিলে তার পর তা যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য। আমি শুধু মনে করিয়ে দিতে চাই, রাজ্যের নাম ‘বঙ্গ’ করার প্রস্তাব বা বিধান পরিষদ তৈরির প্রস্তাব বিধানসভায় পাশ হয়ে দিল্লিতে পড়ে রয়েছে, পাশ হচ্ছে না। তাই আচার্য বিলেরও সেই একই অবস্থা হবে।” প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন, পার্থর এমন আক্রমণের জবাবে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থবাবু বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আচার্য পদে বসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এটা বলেননি যে, এখনও গুজরাতের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনওটিতেই মুখ্যমন্ত্রী আচার্য পদে বসেননি।”
এবার দেখার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে নবান্নের সম্পর্ক বরাবরই ‘বন্ধুর’। তাই আচার্য বিল বিধানসভায় পাশ হলেও রাজ্যপাল তাতে স্বাক্ষর করবেন কি না, তা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন রয়েছে বলেই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের।